Breaking

Wednesday, April 28, 2021

ফরিদপুরের সালথায় পিতার বিরুদ্ধে সন্তানদের সংবাদ সম্মেলন

 




সন্তানদের খুন করে ইতিহাস করার হুমকি পিতার

 মোঃরিফাত ইসলাম।
সন্তানদের মেরে ইতিহাস করার পিতার হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সন্তানেরা। সংবাদ সম্মেলনে তাদের পিতার কাছে ভরণপোষণের জন্য টাকার দাবি জানান।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল, ২০২১ইং) দুপুরে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মুরুটিয়া গ্রামে নানা বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন সুমন খান (১৮), রুমন খান (১৫), সুয়াইফ খান (৯) ও তাদের মা ইসমোত আরা।

সুমন খান নগরকান্দা সরকারী কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র এবং তার ছোট দুই ভাই রুমন ও সুয়াইফ মধুখালী উপজেলার আমডাঙ্গা জামেয়া আশরাফিয়া কওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানা মাদ্রাসার জামায়াত খানা বিভাগের ছাত্র। অভিযুক্ত পাষন্ড পিতা পাশ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার কল্যানপুটি গ্রামের মোঃ রুস্তুম খানের পুত্র ফিরোজ খান।

সংবাদ সম্মেলনে ইসমোত আরা’র বড় ছেলে সুমন বলেন, আমার বাবা আমাদেরসহ মা’কে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলে নানা বাড়িতে অবস্থান করি। এরপর থেকে আমার বাবা আমাদের কোনো খোজ খবর রাখেন না। আমাদের ভরণপোষনের জন্য আমার মা কোর্টের মাধ্যমে ভরণপোষণের টাকা দাবি জানিয়ে এবং যৌতুকের অভিযোগে বাবার বিরুদ্ধে মামলা করে এবং সে মামলায় কোর্টে আমরা তিন ভাই স্বাক্ষী দেই। এ ঘটনায় আমার বাবা আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে এবং অনেকের কাছে বলে বেড়াচ্ছে “ সন্তানদের খুন করে ইতিহাস করে যাবো”। তার এ হুমকির কারনে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় দিনযাপন করে আসছি। আমরা বেঁচে থাকার জন্য সম্বল হিসেবে বাবার কাছে ভরণপোষণের টাকার দাবি জানাচ্ছি।

এ সময় লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী ইসমোত আরা বলেন, আমার স্বামী যৌতুক ও নারী লোভী এবং একজন প্রতারক। আমাদের ২২ বছর আগে ১৯৯৯ ইং তারিখে বিয়ে হয়। এরপর আমাদের তিন পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। আর্থিক অভাব অনটনের কারনে সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি জর্ডান প্রবাসে চলে যাই এবং পরবর্তীতে সৌদিআরব চলে যাই। এ সময়ে আমার টাকা দিয়ে এবং বাবার বাড়ি থেকে কিছু টাকা এনে স্বামী ফিরোজকে ওমান পাঠিয়ে দেই। সেখানে যাওয়ার বছরখানেক পর আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়, সন্তানদেরও খোজ-খবর নেন না। পরে জানতে পারি তিনি সেখানে দুটি বিয়ে করেছেন এবং বর্তমানে রোকসানা নামে এক মহিলার সাথে আছে। গত ৭ জানুয়ারী সে ঐ নারীকে নিয়ে দেশে ফিরে আসে। আমরা প্রতিবাদ জানালে তিনি আমার সন্তানসহ আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। আমি সন্তানদের নিয়ে ভয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসি। এরপর এক শালিসে সে জানিয়ে দেয় আমাদের বাড়ি যেতে দেবে না এবং সন্তানদের ভরণপোষণ করতে পারবে না। এরপর আমি দিশেহারা হয়ে সন্তানদের ভরণপোষণের জন্য ১৭ লক্ষ ২৮ হাজার টাকাসহ দেনমোহরের ১ একলক্ষ ২৫ হাজার টাকার দাবিতে ফরিদপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬নং আমলী আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি মামলা করেছি। এরপর থেকে আমার স্বামী আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে এবং আমাকে তালাক দিয়ে দিবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আমার সন্তানদেরকেও মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছে। আমার স্বামী বলে বেড়াচ্ছে, পিতার হাতে সন্তান খুন করে ইতিহাস করে দেবো। এমতাবস্তায় আমি আমার সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে বসবাস করতেছি। আমি সন্তানদের ভরণপোষণের জন্য টাকা আদায়ের দাবি জানাচ্ছি এবং এই প্রতারক স্বামীর উপযুক্ত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

এ সময় তিনি বলেন, অভিযুক্ত ফিরোজ দেশে থাকা অবস্থায় আরো একটি বিয়ে করেন এবং পরে তাকে তালাক দেন। সেখানে তার একটি ১০ বছরের পুত্র সন্তান আছে। এছাড়া আমি জানতে পেরেছি, বর্তমানে যার সাথে সংসার করতেছে তার সাথে এখনও কাবিন নামা হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ফিরোজ খানা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন। তবে, একাধিক বিয়ের কথা স্বীকার করেন এবং বিদেশ থাকা অবস্থায় এক নারীর সাথে বিয়ে করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, সন্তানেরা এখন আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে এসব অভিযোগ তুলছে এবং আমি ওদের এমন কোনো হুমকি দেয়নি।

No comments:

Post a Comment